Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

টমেটোর হাইব্রিড বীজ উৎপাদন কৌশল

ড. এম. এ. গোফফার
টমেটো ‘সোলানেসি’ পরিবারের অন্তর্গত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সবজি। অধিক পুষ্টিগুণসম্পন্ন এ সবজিটি প্রায় সারা পৃথিবীতেই জন্মানো হয়। অধিক ফলন, আগাম ফসল প্রাপ্তি, অমৌসুমে উৎপাদন ইত্যাদি নানান কারনে হাইব্রিড টমেটোর রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। বিশ্বের নামীদামি সব বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত অধিকাংশ বীজই তাই হাইব্রিড বীজ। সামগ্রীকভাবেই যে কোন ফসলের ভাল বীজ উৎপাদন করা ঐ একই ফসলের উৎপাদনের তুলনায় অধিক দক্ষতা ও শ্রমসাধ্য ব্যাপার। আর হাইব্রিড বীজ উৎপাদনের বেলায় সমগ্র কর্মকাÐ পরিচালনায় অধিক মনোযোগ, বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগ করতে হয়। যাহোক, নি¤েœ টমেটোর হাইব্রিড বীজ উৎপাদনের কলাকৌশল আলোকপাত করা হলো।
হাইব্রিড জাত
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যতায় আলাদা ভিন্ন দুইটি লাইনের মাতৃ ও পিতৃ গাছের মধ্যে সংকরায়নের মাধ্যমে উৎপন্ন জাত যার উৎপাদনশীলতা মাতৃ বা পিতৃ গাছ উভয়ের চেয়েই বেশি হয় সেই জাতটিকে সাধারণ ভাবে হাইব্রিড জাত বলা হয়ে থাকে।
হ্ইাব্রিড টমেটো বীজ উৎপাদনের বিভিন্ন ধাপ
হাইব্রিড টমেটো বীজ উৎপাদন সাধারণ ফসলের বীজ উৎপাদনের মতো নয়। নিম্নলিখিত ধাপে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করে এটা করা হয়ে থাকে।
১.    প্যারেন্টাল লাইনের উন্নয়ন/ইনব্রিড তৈরি/জাত নির্বাচন(উবাবষড়ঢ়সবহঃ ড়ভ ঢ়ধৎবহঃধষ ষরহবং/ রহনৎবফ/         াধৎরবঃু ংবষবপঃরড়হ);
২.    চারা উৎপাদন, রোপণ ও পরিচর্যা (ঝববফষরহম ৎধরংরহম, ঢ়ষধহঃরহম ্ সধহধমবসবহঃ);
৩.    স্ত্রীফুল নির্বাচন ও পুংহীনকরণ (ঋবসধষব ভষড়বিৎ             ংবষবপঃরড়হ ্ বসধংপঁষধঃরড়হ);
৪.    পরাগরেণু সংগ্রহ (চড়ষষবহ পড়ষষবপঃরড়হ);;
৫.    পরাগায়ন ও পরবর্তী পরিচর্যা (চড়ষষরহধঃরড়হ্ ধভঃবৎ পধৎব);
৬.    মাতৃ ও পিতৃ সারির ব্যবস্থাপনা (গধহধমবসবহঃ ড়ভ সধষব ্ ভবসধষব ষরহবং);
৭.    আন্তঃ পরিচর্যা (ওহঃবৎপঁষঃঁৎধষ ড়ঢ়বৎধঃরড়হং)
৮.    বীজ ফল সংগ্রহ (ঋৎঁরঃ পড়ষষবপঃরড়হ ভড়ৎ ংববফ); এবং
৯.    বীজ সংগ্রহ (ঝববফ পড়ষষবপঃরড়হ)।
১. প্যারেন্টাল লাইনের উন্নয়ন/ ইনব্রিড তৈরি/জাত নির্বাচন
কাঙ্খিত মাতা-পিতা/জাত নির্বাচনপূর্বক এর মানসম্পন্ন বীজ সংগ্রহ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, কোন হাইব্রিড বীজ উৎপাদনে প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি হলো-বিভিন্ন কর্ম পরিক্রমার মাধ্যমে বিশুদ্ধ মাতৃ ও পিতৃ সারির উন্নয়ন করা হয়। অতঃপর মাতৃ ফুলে পিতৃ গাছের পরাগরেণু স্থানান্তর পূর্বক হাইব্রিড বীজ উৎপন্ন হয়। তাই কাক্সিক্ষত সংকর জাতের বিশুদ্ধ মাতৃ-পিতৃ গাছের বীজ সংগ্রহ করতে হয়। উল্লেখ্য যে, মাতৃ গাছকে “বীজ মাতা” আর পিতৃ গাছকে “পরাগ মাতাও” বলা হয়ে থাকে ।
জাতভেদে টমেটোর জীবনকাল ১২০-১৫০ দিন। বীজ বপনের সময় সেপ্টে¤¦র- অক্টোবর। বীজ প্রতি হেক্টরে ২০০ গ্রাম (১ গ্রা/শতাংশ)। তবে হাইব্রিড বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ১৭০ গ্রাম বীজ স্ত্রীফুল ও ৩০ গ্রাম বীজ পুরুষ ফুল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হয়।
২. চারা উৎপাদন রোপণ ও পরিচর্যা
ি    সবল চারা উৎপাদনের জন্য প্রথমে ৫০ গ্রাম সুস্থ বীজ ঘন করে প্রতিটি বীজতলায় (১মিদ্ধ৩ মি) বুনতে হয়।
ি    এই হিসেবে প্রতি হেক্টরে ২০০ গ্রাম (১ গ্রাম/শতাংশ) বীজ বুনতে (গজানোর হার ৮০%) ৪ টি বীজতলার প্রয়োজন। কিন্তু হাইব্রিড বীজ উৎপাদনে ৩০ গ্রাম বীজ পুরুষ ফুল উৎপাদনের জন্য স্ত্রী গাছের বীজ বপনের ৭-১০ দিন আগে বপন করতে হয়।
ি    গজানোর ৭-১০ দিন পর চারা দ্বিতীয় বীজতলায় ৪দ্ধ৪ সেমি. দূরত্বে স্থানান্তর করতে হবে।
ি    এক হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের জন্য এরূপ ২২টি বীজতলার প্রয়োজন হয়।
ি    বীজতলায় ৪০-৬০ মেস (প্রতি ইঞ্চিতে ৪০-৬০ টি ছিদ্র যুক্ত) নাইলন নেট দিয়ে ঢেকে চারা উপোদন করলে চারা অবস্থায়ই সাদা মাছি পোকার দ¦ারা পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাস রোগ ছড়ানোর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। এরুপ সুস্থ সবল ও ভাইরাসমুক্ত চারা রোপণ করে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
ি    অতিরিক্ত বৃষ্টি ও রোদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে পলিথিন ও চাটাই এর আচ্ছাদন ব্যবহার করতে হবে।
জমি তৈরি
টমেটো বীজের ভাল ফলন অনেকাংশেই জমি তৈরির উপর নির্ভর করে। তাই ৪-৫ বার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। মাটির প্রকৃতি ও স্থানভেদে ১মি. চওড়া ও ১৫-২০ সেমি. উঁচু বেড তৈরি করতে হবে। দুটি বেডের মাঝে ৩০ সেমি. চওরা নালা করতে হবে যাতে পানি সেচ ও নিষ্কাশনের সুবিধা হয়।
সার প্রয়োগ : নিম্ন বর্ণিত মাত্রায় সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন।
উপরের মাত্রায় গোবর ও রাসায়নিক সার শেষ চাষের আগে জমিতে ভাল করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। উপরি প্রয়োগের ইউরিয়া এবং এমওপি সার গাছের গোড়ার ১০-১৫ সেমি. দূরে দিয়ে মাটির সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে দিতে হবে।
চারা রোপণ ও পরিচর্যা
সাধারণত পুরুষ/পিতৃ লাইন (গধষব ঢ়ধৎবহঃ) স্ত্রী লাইনের             (ঋবসধষব ঢ়ধৎবহঃ) ৭-১০ দিন পূর্বে লাগানোর হয় যাতে করে পরবর্তীতে স্ত্রী ফুলে পরাগায়নের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ভাল উর্বর শক্তিসম্পন্ন (ভবৎঃরষব ধহফারমড়ৎড়ঁং) পরাগরেণু পাওয়া যায়। সাধারণভাবে পুরুষ ও স্ত্রী লাইনের অনুপাত ১ঃ৫ রাখা হয়। বিকেলের পড়ন্ত রোদে চারা রোপণ করাই উত্তম এবং লাগানোর পর গোড়ায় হালকা সেচ প্রদান করতে হবে। এক মিটার চওড়া বেডে দুই সারি করে চারা লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দুরত্ব ৬০ সেমি. এবং সারিতে চারা থেকে চারা ৪০ সেমি. দূরত্বে লাগাতে হবে। তবে ৭০ সেমি চওড়া বেডে ৫০ সেমি. দূরত্বেও চারা রোপণ করা যেতে পারে। বিভিন্ন অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা যেমন সার প্রয়োগ, মালচিং, আগাছা দমন, সেচ ও নিষ্কাশন, শাখা ছাঁটাই, রোগ ও পোকা দমন এগুলো এমন ভাবে করতে হবে যেন পরাগায়ন ও ফল ধারণের সময় গাছ সজীব ও সতেজ থাকে। তবে পরাগায়ন ও পুংহীনকরণের পূর্বেই বিভিন্ন সময় রোগিং এর মাধ্যমে অনাকাক্সিক্ষত গাছ সরিয়ে ফেলতে হবে এবং প্যারেন্ট লাইনের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। এ সময়ে ইতোমধ্যেই ফুটে যাওয়া ফুল ও ফলও ছেঁটে ফেলতে হবে।
৩. স্ত্রীফুল নির্বাচন ও পুংকেশর অপসারণ
ি    প্রথম ফুলগুচ্ছ (ঋষড়বিৎ পঁষংঃবৎ) অপসারণ পূর্বক ২য়   ভষড়বিৎ পঁষংঃবৎ এর ফুল থেকে শুরু করতে হয়।
ি    ফুলের থোকায় যদি ফল বা ফুটন্ত ফুল থাকে তা কেটে ফেলা দরকার।
ি    মোটামুটি ১/২ দিন পর ফুটবে এমন অফুটন্ত হালকা হলুদ রং এর কুঁড়ি বিবেচনায় নিতে হয়। কারণ এ অবস্থার আগে নিলে কুঁড়ি খুব ছোট থাকায় গর্ভদÐ বা গর্ভাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর এর পরে নিলে ফুলের ভেতর স¦তস্ফ‚র্ত ভাবে পরাগায়ন পরাগধানী অপসারণের সময় ঘটে যেতে পারে, বিধায় হাইব্রিড বীজ হবে না।
ি    পরাগায়নের আগের দিন বিকালে চিমটা (ঋড়ৎপবঢ়) দ্বারা অতি সাবধানে কুঁড়ি উন্মুক্ত করে পুংকেশর (পুদন্ডসহ           পরাগধানী) অপসারণ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, ক্রসিং কাজের মোট সময়ের ২/৩ অংশ সময়ই পুংরহিত করণ কাজে ব্যয় হয়। বাণিজ্যিক বীজ উৎপাদনে পুংরহিত করণের পর কাগজের ব্যাগ দিয়ে ঢাকতে হয় না কারণ ফুটন্ত কোন ফুল স্ত্রী বøকে রাখা হয় না।
৪. পরাগরেণু সংগ্রহ
পূর্ব নির্ধারিত রোপিত পুরুষ গাছের ফুল যা সকালে ফুটেছে বা ফুটন্ত অবস্থায় আছে এমন ফুল সংগ্রহ করে একটি কাঁচের বাটি বা পেট্রিডিসে রাখতে হয়। অতঃপর কাল কাচ খÐের উপর বাম হাতে ধরে সুচ দ্বারা হালকা টোকা দিলে পুংস্তবক থেকে পরাগরেণু বের হবে। যা কাঁচের ছোট টিডবেও সংরক্ষণ করা যায়। যদি আলোক উজ্জ্বল আবহাওয়া না হয় তাহলে শিশির সিক্ত ফুল সংগ্রহ করার পর সাবধানতার সাথে ফুল থেকে কলি বের করে পাতলা সেলোফেন ব্যাগে ভরে ১০০ ওয়াট বৈদ্যুতিক বাতির নিচে ২৯-৩০০ ডিগ্রি সে. তাপে ২৪ ঘন্টা শুকিয়ে নিয়ে পরাগরেণু সংগ্রহ করা যায়।
৫. পরাগায়ন ও পরবর্তী করণীয়
পরাগরেণু সংগ্রহের পরপরই সকাল ৮.৩০-১১.০০ টার মধ্যে আগের দিন পুংরহিত স্ত্রীফুলের গর্ভমুÐে লাগিয়ে দিতে হয়। যা নিমোক্তভাবে করা যায়ঃ
ি    সকালের মেঘ বা কুয়াশামুক্ত সময়ে গাছের সারিকে বামে রেখে বাম হাতে পুংরহিত স্ত্রীফুল ধরতে হয়।
ি    ডান হাতে রক্ষিত ভেসেলটির পরাগরেণু গর্ভমুÐে ২-৩ বার স্পর্শ করতে হয় যাতে পর্যাপ্ত পরাগরেণু গর্ভমুÐে স্থানান্তরিত হয়।
ি    পরাগায়িত স্ত্রীফুলটির ২-৩ টি বৃত্তাংশ কেটে দিতে হয় যাতে পরাগায়িত ও অপরাগায়িত ফুল সহজে চিহ্নিত করা যায়।
ি    মাঝে মধ্যে অবশ্যই পরিদর্শনপূর্বক অপরাগায়িত ফুল, ফল ও অবাঞ্চিত ডালসহ কুড়ি ছাটাই করে দিতে হবে।
উপরোক্ত পরাগায়ন কার্যক্রমটি প্রতি গাছের ৪০-৫০টি ফুলে করতে হয় যাতে প্রতিটি গাছে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফল ধারণ ছোট ছোট ফল বিশিষ্ট প্রতি টমেটো গাছে ৬০-৭০টি ফুল এবং মাঝারি থেকে বড় ফল বিশিষ্ট টমেটো গাছের ৪৫-৫০টি ফুল করতে হয়। যাতে মোটামুটি যথাক্রমে ৪০-৫০টি ও ৩০-৪০টি ফল ধারন করে যদিও গাছে ফলের সংখ্যা রাখা নির্ভর করে বীজ মাতার ফলের গড় ওজন বা আকার ও ফল প্রতি বীজের সংখ্যার উপর। সাধারণভাবে বড় আকারের ফল হলে ২০ ফল/গাছ, মাধ্যম আকারের হলে ৩০ফল/গাছ আর যদি ছোট ছোট ফল হয় তাহলে প্রতি গাছে ৩০ টির অধিক ফল রাখা হয় যাতে পর্যাপ্ত বীজ পাওয়া যায়।
৬. মাতৃ-পিতৃ সারির ব্যবস্থাপনা
উল্লেখ্য যে, মাতা-পিতার কৌলিতাত্তি¡ক বৈশিষ্ট্য রক্ষার্থে একই জমির স্ত্রীগাছের বøক হতে অপরাগায়িত বাছাই করা ফল এবং পুরুষ গাছের বøক হতে নির্বাচিত ফল থেকে পুনশ্চ ব্যবহারের জন্য বীজ রাখা যেতে পারে। কি¤¦া মাতা-পিতার বীজ বর্ধনের জন্য আলাদা আলাদা জমিতে টমেটো ফসল চাষ করে বীজ সংরক্ষণ করা যায়।
৭. পরবর্তী পরিচর্যা
সেচ ও নিষ্কাশন : চারা রোপণের ৩-৪ দিন পর পর্যন্ত হালকা সেচ ও পরবর্তীতে প্রতি কিস্তি সার প্রয়োগের পর জমিতে সেচ দিতে হয়। টমেটো গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। সেচ অথবা বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি দ্রæত নিষ্কাশনের জন্য নালা পরিমিত চওড়া (৩০-৪০ সেমি.) এবং এক দিকে সমান ঢালু হওয়া বাঞ্চণীয়।
মালচিং : প্রতিটি সেচের পরে মাটির উপরিভাগের চটা ভেঙ্গে দিতে হবে যাতে মাটিতে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে।
আগাছা দমন : টমেটোর জমিকে প্রয়োজনীয় নিড়ানি দিয়ে আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
সার উপরি প্রয়োগ : সময়মত বর্ণিত মাত্রায় প্রয়োজনীয় সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
বিশেষ পরিচর্যা : ১ম ফুলের গোছার ঠিক নিচের কুশিটি ছাড়া নিচের সব পার্শ্ব কুশি ছাঁটাই করতে হবে। মুটামুটি ৪-৫ বার ছাঁটাই বা প্রুনিং করতে হয়। আর ঙঢ় উন্মুক্ত পরাগায়িত বীজ উৎপাদনে ফলের থোকায় ছোট ফলগুলো অপসারণ করে পাতলা করতে হয়। গাছে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঠেকনা দিতে হবে।
বালাই ব্যবস্থাপনা
সাদা মাছি পোকা
ি    এরা পাতার রস চুষে খায় বলে পাতা কুঁকড়ে যায়।
ি    এদের আক্রমণে পাতার মধ্যে অসংখ্য ছোট ছোট সাদা বা হলদে দাগ দেখা যায়। পরে অনেক দাগ একত্রে মিশে সবুজ শিরাসহ পাতা হলুদ হয়ে যায়।
ি    সাদা মাছি পোকার নিম্ফ রস খাওয়ার সময় এক ধরনের আঠালো মধুর মতো রস নিঃসরণ করে। এ রস পাতায় আটকে গেলে তাতে শুটিমোল্ড নামক এক প্রকার কালো রঙের ছত্রাক জন্মায় ফলে গাছের সালোকসংশ্লেষণ ক্রিয়া বিঘিœত হয়।
ি    হলুদ পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করে।
দমন ব্যবস্থাপনা
ি    সহনশীল জাত যেমন বারি উদ্ভাবিত টিএলবি ১৩০, টিএলবি ১৮২ চাষ করা।
ি    এক কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ১০ লিটার পানিতে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানি পাতার নীচের দিকে স্প্রে করা।
ি    বীজতলা মশারীর নেট দিয়ে ঢেকে রাখা।
ি    হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা।
ি    আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি জাতীয় কীটনাশক (প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি পরিমাণ) অথবা এডমায়ার ২০০ এস এল (প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি পরিমাণ) মিশিয়ে স্প্রে করা। তবে ঘন ঘন কীটনাশক ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এর ফলে এ পোকা কীটনাশকের প্রতি দ্রæত সহনশীলতা গড়ে তোলে।
ড্যা¤িপং অফ
ি    ছত্রাকজনিত কারণে চারার গোড়ায় পানিভেজা দাগ হয়ে পচে যায়। অনেক সময় শিকড় পচে ও চারা মারা যায়।
দমন ব্যবস্থাপনা
ি    মুরগীর বিষ্ঠা/সরিষার খৈল বীজ বপনের তিন সপ্তাহ আগে জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
ি    আক্তান্ত জায়গায় রিডোমিল গোল্ড (০.২%) দিয়ে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে।
ঢলেপড়া রোগ
ি    গাছের যে কোন বয়সে এ রোগ দেখা যায়।
ি    আক্রান্ত গাছ যে কোন সময় ঢলে পড়ে যায়।
ি    পুরো গাছটি দ্রæত মারা যায় ও ফলন কম হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা
ি    আক্রান্ত গাছ দেখলেই তা তুলে ধ্বংস করা।
ি    রোগ প্রতিরোধী জাতের চাষ করা।
ি    বন বেগুন যথা টরভাম ও সিসি¤িব্রফলিয়ামের সাথে জোড় কলম করা।
নাবী ধসা/মড়ক
ি    টমেটো গাছের পাতাতে কালো কালো দাগ দেখা যায় যা পানিতে ভিজা ভিজা মনে হবে।
ি    আক্রান্ত পাতার নিচে সাদা রঙের ছাতা (ছত্রাকজালি) পড়ে থাকতে দেখা যায়। আক্রান্ত পাতা বা কাÐে তুলার মতো ছত্রাকজালির আবরণ দেখা যায়।
ি    আক্রান্ত জমি থেকে পোড়া পোড়া গন্ধ পাওয়া যায়।
ি    শেষ অবস্থায় এসে পাতা, কাÐ, শাখা সবই আক্রান্ত হয়ে গাছগুলো দেখতে সম্পূর্ণ পুড়ে যাবার মতো মনে হবে।
দমন ব্যবস্থাপনা
ি    আকাশ মেঘাচ্ছন্ন অথবা ঘন কুয়াশা ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি      ৩-৪ দিনের বেশি চলতে থাকলে দেরি না করে ছত্রাকনাশক যেমন-রিডোমিল গোল্ড বা ম্যানকোজেব ব্যবহার করা। ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১ম বার স্প্রে করার ৩ দিন পর ২য় বার স্প্রে করতে হবে।
ি    আক্রান্ত বছরের ফসল স¤পূর্ণ পুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলতে হবে।
হলুদ পাতা কুঁকড়ানো
ি    পাতার কিনারা থেকে মধ্যশিরার দিকে গুটিয়ে যায়।
ি    পাতা খসখসে হয়ে শিরাগুলো স¦চ্ছ হলুদ হয়ে কুঁকড়িয়ে যায়। পাতা পীতবর্ণ হয়ে কুঁকড়িয়ে যায়।
ি    আক্রান্ত গাছের ডগায় ছোট ছোট পাতা গুচ্ছ আকার ধারণ করে।
দমন ব্যবস্থাপনা
ি    চারা লাগানোর এক সপ্তাহ পর থেকে ৭-১০ দিন পরপর এডমায়ার নামক বিষ প্রয়োগ করে সাদা মাছি পোকা দমন করতে হবে।
ি    টমেটোর জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে। আক্রান্ত গাছ উঠিয়ে মাটিতে পুঁতে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
ি    রোগমুক্ত চারা লাগাতে হবে।
ি    ক্ষুদ্র ছিদ্রযুক্ত (প্রতি বর্গইঞ্চিতে ৪০-৬০ টি ছিদ্র) নাইলনের নেট দিয়ে বীজতলা ঢেকে চারা উৎপাদন করতে হবে।
ি    ফল সংগ্রহের দুই সপ্তাহ আগেই স্প্রে বন্ধ করতে হবে।
বীজ উৎপাদনের জন্য বিশেষ কাজগুলো করণীয়
রোগিং : পাতার রং, আকার, আকৃতি, গাছের উচ্চতা, ফলের রং, আকার, আকৃতি ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে কোন গাছ ভিন্নতর মনে হলে তা উঠিয়ে ফেলতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছ দেখা মাত্রই সম্পূর্ণ সরিয়ে ফেলতে হবে। টমেটো বীজ ফসলের মাঠ কমপক্ষে ৩ বার পরিদর্শন করতে হবে। ফুল আসার আগে প্রথম পরিদর্শন, ফুল আসা ও ফল ধরার সময় দ্বিতীয় পরিদর্শন এবং ফল পরিপক্ব হওয়ার সময় তৃতীয় পরিদর্শন করতে হয়।
পৃথকীকরণ দূরত্ব : টমেটো একটি স্বপরাগায়িত ফসল হলেও ২-৫% পরপরাগায়ন ঘটে থাকে। বীজ ফসলের জমি অন্য জাতের জমি থেকে ৫০ মিটার দূরত্ব রাখলে বিশুদ্ধ বীজ উৎপাদন হবে।
বীজ ফল চিহ্নিতকরণ ও সংগ্রহ : রোগাক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত বা পচা ফল বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সুস্থ স্বাভাবিক ফল বীজের জন্য বাছাই করে আলাদাভাবে সংগ্রহ করতে হবে। ফলের রং গাঢ় লাল হলেই ফল সংগ্রহ করা উচিত। শুধুমাত্র পরিপূর্ণভাবে পরিপক্ব হলেই ফল বীজের জন্য সংগ্রহ করা যায়। ফল সংগ্রহ করার পূর্বে নিশ্চিত হবার জন্য বৃতি কাঁটা আছে কিনা লক্ষ্য রাখতে হবে। অতঃপর সংগ্রহকৃত ফলগুলো ২-৩ দিন রেখে দিতে হয়।
বীজ ফল সংগ্রহ
ি    সংগ্রহকৃত ফল প্রথমে একটি জায়গায় ২-৩ দিনের জন্য পালা করে রাখতে হয় যতক্ষণ না পর্যন্ত তা নরম হয়ে যায়।
ি    এরপর ফলগুলোকে একটি কাঠের বা প্লাস্টিকের বা সিমেন্টের পাত্রে গাজন প্রক্রিয়ার জন্য রাখা হয়। তবে ধাতব কোন পাত্র কোন ক্রমেই ব্যবহার করা উচিত নয়। এসময় সম্পূর্ণ ফলগুলিকে পা দিয়ে মাড়িয়ে ভেঙে দেয়া হয়। ফল শক্ত হলে চাকু দিয়ে কেটে শুধু ভিতরের পাল্পসহ বীজগুলোকে আলাদা করে রাখা যেতে পারে। সাধারণত ২০০-২১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ২৪-৩৬ ঘণ্টা ফারমেনটেশনে রাখলেই যথেষ্ট। গাজন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য এসময় কোনক্রমেই পানি দেয়া যাবে না।
ি    গাজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে পাত্রে পানি ঢেলে দিয়ে ভালোভাবে নাড়িয়ে দিতে হবে।
ি    এভাবে কিছুক্ষণ নাড়ালে বীজ নরম জেলির মতো অংশ হতে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে নিচে পড়ে থাকবে। তখন নেটের সাহায্যে উপরের উচ্ছিষ্ট অংশগুলো ফেলে দিয়ে বীজগুলো সংগ্রহ করতে হবে।
ি    বীজস্থ মিউসিলেজ দূর করার জন্য প্রতি কেজি ফলের পাল্পে ২০ মিলি. বাণিজ্যিক হাইড্রোকেøারিক এসিড (এসিড পাল্পে ঢালতে হবে) মিশিয়ে ৩০ মিনিট রেখে তারপর ধুতে হবে। এতে বীজের অংকুরোদগম হারও বৃদ্ধি পায়।
ি    সংগ্রহকৃত বীজ সাথে সাথেই কয়েক দিন রৌদ্রে শুকাতে হবে। ভালোভাবে শুকানো বীজে জলীয় অংশের পরিমাণ ৮% থাকে।
বীজের ফলন
বীজের ফলন অনেক গুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করলেও এক টন ফল থেকে মোটামুটিভাবে ১০ কেজি বীজ পাওয়া যায় অর্থাৎ ফ্রেশ টমেটোর ১% বীজ হয়ে থাকে। য়
প্রধান বৈজ্ঞাানিক কর্মকর্তা সবজি বিভাগ, উদ্যানতত্ত¡ গবেষণা কেন্দ্র বারি, গাজীপুর। মোবাইল : ০১৫৫২৪৪২৫১২, ই-মেইল : mgoffar@yahoo.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon